মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে নানা রোগ বিদ্যমান রয়েছে। এর মধ্যে এইচআইভি জীবানু বহন করছে অনেকে। এ পর্যন্ত এইচআইভিতে আক্রান্ত ৫৯ রোহিঙ্গা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি।  

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিন আবদুর রহমান চৌধুরী জানান, গত ২৫ আগষ্ট থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে এপর্যন্ত ৫৯ জন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে।   এর মধ্যে ৩০ জন মহিলা, ১৯ জন পুরুষ ও ১০ জন শিশু রয়েছে। এদের সবার চিকিৎসা চলছে।   চিকিৎসা শুরু না করার আগে ১ জন মারা গেছে।   কক্সবাজার জেলা সদরহাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তাদের।

তিনি বলেন, শনাক্ত করা রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই এইচআইভি রোগী জেনে নিজেরাই চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এত রোহিঙ্গার মধ্যে আরো অসংখ্য এইচআইভি বহনকারী রোগী থাকতে পারে।

একসাথে এত রোহিঙ্গার মাঝে এই রোগ শনাক্ত করা কঠিন। তাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট করে শনাক্তের কাজ চলছে।

কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবদুল সালাম জানান, বিশ্বের এইচআইভি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে মিয়ানমার শীর্ষ তালিকায় রয়েছে। তাই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে রয়েছে প্রচুর এইচআইভিপজেটিভ রোগী। রোহিঙ্গাদের মাঝে এইচআইভি রোগী ক্রমান্বয়ে শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ অন্য রোগের চিকিৎসা নিতে আসলে তাদের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে ১০০ জন এমবিবিএস, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ইন্টার্নি চিকিৎসক, মেডিকেল স্টুডেন্টসহ ২ হাজার জনবল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।   চিকিৎসা ক্যাম্পেইনে এইচআইভি শনাক্তসহসংক্রামক রোগীদের শনাক্ত করতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন জানান, রোহিঙ্গারা নানা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। তাদের কারণে স্থানীয়দের মাঝে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এইচআইভি আক্রান্ত সব রোহিঙ্গা রোগীদেরশনাক্ত করে তাদের একটি নির্ধারিত স্থানে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে এইচ আইভি মহাকার ধারণ করবে।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে গিয়ে যাতে স্থানীয়দের বিপদে পড়তে না হয়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এইচআইভিসহসংক্রামক রোগ ছড়ানোর আশংকা রয়েছে। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।